Uncategorized

রাসেলস ভাইপার সাপের আক্রমণ, প্রয়োজন সতর্কতা

সাপের নাম শুনে ভয় পায় না এমন মানুষ খুব কমই আছে। সাপ একটি নিরীহ প্রাণী। শুধু সাপ দেখলেই কামড়াতে পারে এই ভয়ে মানুষ তাকে মারতে চায়। বিশ্বে ৪ হাজার ৭৩ প্রজাতির সাপ রয়েছে। বাস্তবতা হল এই সাপের মধ্যে মাত্র 20 শতাংশই বিষাক্ত। বাকি সবই নিরীহ। আর বাংলাদেশে 2 প্রজাতির গোখরো, 5 প্রজাতির কিউটি এবং ভাইপার প্রজাতির রাসেল ভাইপারের কামড়ে মানুষ মারা যায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ৫ লাখ ৮০ হাজার মানুষকে সাপে কামড়ে এবং তাদের মধ্যে ৬ হাজারের মৃত্যু হয়। অত্যন্ত বিষাক্ত প্রজাতির রাসেল ভাইপার অনেক আগেই বাংলাদেশ থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে বলে ধারণা করা হলেও সাম্প্রতিক সময়ে এর অবাধ বিচরণ বিশেষজ্ঞদের উদ্বিগ্ন করে তুলেছে।

বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় ভয়ঙ্কর রাসেলের ভাইপার সাপের উপদ্রব উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে। রাসেল ভাইপার নামের বিষাক্ত সাপের আক্রমণে আতঙ্কে দিন পার করছে সাধারণ মানুষ। দেশের তৃণভূমি ও নদীতীরবর্তী এলাকায় রাসেল ভাইপারের ক্রমবর্ধমান উপদ্রব উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাসেলের ভাইপার আতঙ্ক মানুষের দৈনন্দিন জীবন ও কৃষিকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করছে।

সাপের কামড় এড়াতে করণীয়

# যেসব এলাকায় রাসেল ভাইপার দেখা গিয়েছে, সেসব এলাকায় চলাচলে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করুন।

# লম্বা ঘাস, ঝোপঝাড়, কৃষি এলাকায় হাঁটার সময় সতর্ক থাকুন।

# গর্তের মধ্যে হাত-পা ঢুকাবেন না।

# সংশ্লিষ্ট এলাকায় কাজ করার সময় বুট ও লম্বা প্যান্ট পরুন।

# রাতে চলাচলের সময় অবশ্যই টর্চ লাইট ব্যবহার করুন।

# বাড়ির চারপাশ পরিষ্কার ও আবর্জনামুক্ত রাখুন।

# পতিত গাছ, জ্বালানি লাকড়ি, খড় সরানোর সময় বিশেষ সাবধানতা অবলম্বন করুন।

# সাপ দেখলে তা ধরা বা মারার চেষ্টা করবেন না। এবং

# প্রয়োজনে জাতীয় হেল্প লাইন ৩৩৩ নম্বরে কল করুন বা নিকটস্থ বন বিভাগের অফিসকে অবহিত করুন।

রাসেল ভাইপার সাপের কামড় খেলে করণীয়

# যেখানে কামড় খেয়েছেন, শরীরের সেই জায়গাটি নড়াচড়া করা যাবে না। এই সাপ পায়ে দংশন করলে বসে যেতে হবে, হাঁটা যাবে না। হাতে দংশনে হাত নড়াচড়া করা যাবে না। হাত-পায়ের গিরা নাড়াচাড়ায় মাংসপেশীর সংকোচনের ফলে বিষ দ্রুত রক্তের মাধ্যমে শরীরে ছড়িয়ে গিয়ে বিষক্রিয়া করতে পারে।

# আক্রান্ত স্থান সাবান দিয়ে আলতোভাবে ধুতে হবে অথবা ভেজা কাপড় দিয়ে আলতোভাবে মুছতে হবে।

# শরীরে ঘড়ি বা অলঙ্কার বা তাবিজ, তাগা ইত্যাদি থাকলে খুলে ফেলুন।

# আক্রান্ত স্থানে কাটবেন না, সুঁই ফোটাবেন না, কিংবা কোনো রকম প্রলেপ লাগাবেন না বা অন্য কিছু প্রয়োগ করা উচিত নয়।

# সাপে কাটলে ওঝার কাছে গিয়ে অযথা সময় নষ্ট করবেন না।

# যত দ্রুত সম্ভব নিকটস্থ হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে যান।

# আতঙ্কিত হবেন না, রাসেল ভাইপারের বিষ প্রতিষেধক বা অ্যান্টিভেনম নিকটস্থ সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, দেশে পর্যাপ্ত পরিমাণ বিষ প্রতিষেধক বা অ্যান্টিভেনম আছে এবং সব জায়গায় হাসপাতালগুলোতে অ্যান্টিভেনম রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *